৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ভুয়া দুই দুদক কর্মকর্তারা

২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত  ৫০০ সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে ৪০ থেকে ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভুয়া দুই কর্মকর্তা আনিছুর রহমান ও তার সহযোগী ইয়াসিন। দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোবাইলে ফোনকল দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন তার। আজ শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-৩) মহিউদ্দিন ফারুকী এসব তথ্য জানান। এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাজারীবাগের সনাতন গড় বৌবাজার থেকে আনিসুর রহমান ওরফে বাবুলকে (৩৬) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হাজরীবাগের নবীপুর লেনের একটি দোকান থেকে চক্রের অপর সদস্য বিকাশ এজেন্ট ইয়াসিন তালুকদাকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২১টি মোবাইল ফোন ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করা ২৬টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়। মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘দেশব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের পর থেকে এই চক্রের অপতৎপরতা বেড়ে যায়। তারা সরকারি টেলিফোন ডিরেক্টরি থেকে ফোন নম্বর নিয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের টার্গেট করে দুর্নীতির মামলার ভয়ভীতি দেখাতো। এজন্য মামলার ভুয়া নম্বর দিয়ে খোঁজ নিতেও বলতো। এরপর তারা বিকাশের টাকা হাতিয়ে নিতো।’ তিনি আরও  বলেন, ‘২৭ জানুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে র‌্যাব মহাপরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠির তদন্তে নেমে এই চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, এই চক্রের আরও সাত থেকে আটজন পলাতক রয়েছে এবং আটকদের একজন গুরুর বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’ র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ চক্রের সদস্য ইয়াসিন তালুকদার একজন বিকাশ এজেন্ট। হাজারীবাগে ৪২/১ নবীপুর লেনে সাইফুল এন্টারপ্রাইজ টেলিকম নামে তার একটি দোকানও রয়েছে। ওই দোকানে সে অন্য মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সিমের ভুয়া রেজিস্ট্রেশন এবং বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলতো।’ গ্রেপ্তারকৃতদের উদ্বৃতি দিয়ে র‌্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, তাদের ৭ থেকে ১০টি গ্রুপ রয়েছে। তারা দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করে। তারা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরগুনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা তুলে নেয়।’ আসামিদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে র‌্যাবের একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-৩) মহিউদ্দিন ফারুকী।