রাজধানীর উত্তরা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১। এর মধ্যে রবিউল ইসলাম ওরফে নুরুল ইসলাম (২৪) ও শাহরিয়ার নাফিস ওরফে আম্মার হোসেন (২০) বগুড়ার ধুনটের চরখুকশিয়া গ্রামের রেজাউল করিম টিপুর ছেলে।গত শুক্রবার গণমাধ্যমে দুই সহোদরের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর জানার পর গ্রামটির বাসিন্দারা বলছেন, বেশির ভাগ সময় গ্রামের বাইরে থাকা দুই ভাই তাদের কাছে নম্র-ভদ্র হিসেবেই পরিচিত ছিল। তাদের আচার-আচরণ ও কথাবার্তায় উগ্রবাদের কিছু বোঝা যায়নি। তবে ৩/৪ বছর ধরে তারা তাদের বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দেয়নি। পরিবারটি কঠোরভাবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা শুরু করে।গতকাল শনিবার গ্রামটিতে রবিউল ও আম্মারের বিষয়ে বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা হয়। জানা যায়, রেজাউল করিম টিপুর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। ১৯৯২ সাল থেকে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় পাওয়ার লুম কারখানায় কাজ করছেন তিনি। মেয়েদের অনেক আগেই বিয়ে দিয়েছেন। অভাব-অনটন সত্ত্বেও দুই ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার ইচ্ছা ছিল তার।বড় ছেলে রবিউল গ্রামের পাশে মহিশুরা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০১০ সালে দাখিল পাস করে। ২০১৫ সালে বগুড়া পলিটেকনিক থেকে ডিপ্লোমা করে সে। ওই বছরই তবলিগ জামাতে যোগ দিয়ে প্রায় এক বছর ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়ায়। ২ বছর ধরে বাবার সঙ্গে একই কর্মস্থলে কাজ করছিল রবিউল।ছোট ছেলে আম্মারও প্রথমে মহিশুরা দাখিল মাদ্রাসা ও পরে ২০১৩ সালে বগুড়া মারকাজ মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। ২০১৬ সালে মহিশুরা দাখিল মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় পাস করে। এর পর সিরাজগঞ্জের আলমপুর কওমি মাদ্রাসা, নরসিংদীর মাধবদী দরগাবাড়ি কওমি মাদ্রাসা ও ঢাকার যাত্রাবাড়ী আবু বক্কর কওমি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে সে ৫ পারা কোরআন হেফজ করে। সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের বেতগাড়ি দাখিল মাদ্রাসা থেকে চলতি দাখিল পরীক্ষায় তার অংশ নেওয়ার কথা ছিল। প্রায় ৫ মাস আগে কুমিল্লার দাউদকান্দি মেঘনা সেতু এলাকায় মশার কয়েল তৈরির কারখানায় কাজ নেয় আম্মার হোসেন।চরখুকশিয়া গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন ও ইব্রাহীম হোসেনসহ অনেকে জানান, ছোটবেলা থেকেই রবিউল ও আম্মার হোসেনকে নম্র-ভদ্র স্বভাবের বলে জানত তারা। বেশির ভাগ সময় তারা গ্রামের বাইরেই থেকেছে। তবে মাঝেমধ্যে গ্রামে এলে সবাইকে নামাজ পড়ার কথা বলত। গ্রামের মসজিদে ইমামতিও করেছে। ইসলামি শরিয়ামতে জীবনযাপন করতে বলত। বেনামাজির হাতের কোনো কিছুই খেত না। প্রায় ৩/৪ বছর ধরে তাদের বাড়িতে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি। পরিবারটি কঠোরভাবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা শুরু করে। তবে তাদের আচার-আচরণ ও কথাবার্তায় জঙ্গিবাদের কিছুই বোঝা যায়নি।তাদের বাবা রেজাউল করিম টিপু বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা হয়তো মৌলবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়াতে পারে। তাদের এমন পরিবর্তন আমরা বুঝতে পারিনি। আমি বিশ্বাসও করতে পারছি না, আমার সোনার ছেলেরা এ ধরনের কাজ করবে। ভেবেছিলাম ছেলেরা আলেম হবে, কিন্তু এখন শুনছি জঙ্গি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যারা আমার কোমলমতি দুই সন্তানকে জঙ্গি বানিয়েছে, তাদের শাস্তি চাই। আমি চাই আর কারও সন্তান যেন এ ধরনের জঙ্গিবাদে না জড়ায়। এ জন্য আমি সরকারের কাছে কঠোর পদক্ষেপ দাবি করছি।
সর্বশেষ
সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
দর্পন টিভি - 0
সুনামগঞ্জের শাল্লায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে উপজেলার জনস্বাস্থ্যের নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদে...