সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্য ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ (এফএআইসি) প্রবাসী বিনিয়োগকারী ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ১০ বছরের ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। ইতিমধ্যে দেশটির মন্ত্রিসভা বিষয়টি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে। গত বছরের নভেম্বরে দেশটির মন্ত্রিসভা এ সিদ্ধান্ত নেয়। আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রবাসী বিনিয়োগকারী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিশেষজ্ঞ ও মেধাবী শিক্ষার্থীসহ তাদের পরিবারের জন্য ১০ বছরের ভিসা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আমিরাত সরকার। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য শতভাগ মালিকানাধীন বিদেশি কোম্পানি, বিনিয়োগকারী, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ বছরের ভিসা প্রদান করা হবে। দেশে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন এই ভিসা নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে দেশে বিদেশি উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী ও মেধাবীদের আকৃষ্ট করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা বলছেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত সৃজনশীলতা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি পছন্দের গন্তব্য। তাই এখানে কিছু সুবিধা দিলে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হবেন।’ আবুধাবির অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সাইফ মোহাম্মদ আল হাজিরি বলেন, ‘নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে শক্তিশালী সমন্বিত জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আরব আমিরাতের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব ও সরকারের বৃদ্ধিদীপ্ত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আরব আমিরাতের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’ বিনিয়োগকারী এবং বিজ্ঞানীরা ১০ বছরের ভিসা পেলে তারা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন বলে ধারণা করছেন তারা। তবে ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে দেশটির সাধারণ নিয়মের চেয়ে বেশ কিছু ভিন্নতা রয়েছে। কারণ আরব আমিরাত হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের এমন একটি দেশ যেখানে দেশের নীতিনির্ধারকরা খুবই বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে থাকেন। বলা যায় প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে তাদের আইন কানুন সময়পোযোগী। প্রসঙ্গত, আরব আমিরাতের নিয়ম অনুযায়ী ক্ষুদ্র কিংবা মাঝারি ব্যবসাতে কোনো প্রবাসী শতভাগ ইনভেস্টর হিসেবে থাকতে পারেন না। দেশটির নাগরিকদের নামে লাইসেন্স নিয়ে সেখানে ব্যবসা করতে হয়। কেবলমাত্র বড় বড় ব্যবসায়ীরাই দেশটিতে শতভাগ বিনিয়োগকারী হিসেবে নিজেদের ব্যবসায়িক মালিকানা নিতে পারেন। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের ৫-১০ বছরের ভিসা প্রদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে দীর্ঘমেয়াদে কোর্স করা শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। কারণ এসব শিক্ষার্থীরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে প্রতিমাসে ৫-১০ হাজার দিরহাম যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ থেকে দুই লাখ টাকা ব্যয় করে থাকেন। এসব শিক্ষার্থীরা যাতে অধ্যয়ন শেষে দেশটিতে বিনিয়োগ করে সে বিষয়টিও বিবেচনায় নেন আমিরাত সরকার।