হাত ধরাধরি করে এগিয়ে যাবে ঢাকা-দিল্লি

ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশ ও ভারত পারস্পরিক সহযোগিতার পরিধি বিস্তার করছে। যেসব বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা চলছে, তার বাইরে গিয়ে উচ্চপ্রযুক্তি ক্ষেত্রগুলোয় হাত ধরাধরি করে এগিয়ে যাবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিকস। এ ছাড়া দুই দেশের সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বলে মন্তব্য করা হয়।বাংলাদেশ ও ভারতের পঞ্চম যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকের পর গতকাল দুই দেশের পক্ষ থেকে প্রচারিত যৌথ প্রেস বিবৃতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনার এ কথা বলা হয়।রাজধানী নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জওহরলাল নেহরু ভবনে গতকাল জেসিসির এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন, ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। জেসিসির বৈঠকের আগে জওহর ভবনেই দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একান্তে সাক্ষাৎ করেন। আধা ঘণ্টার ওই আলোচনায় পারস্পরিক চেনাজানার পাশাপাশি দুজনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়েও কথা হয়।যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ সম্পর্ককে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যা উন্নতমনা ও সুদূরপ্রসারীই শুধু নয়, যেখান থেকে পিছু হটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরকারি কর্তাদের বলেন, সম্পর্ককে এমন উচ্চতায় স্থাপন করতে হবে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সঙ্গে মানানসই হয়। ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি।বৈঠকের শুরুতেই সুষমা স্বরাজ অভিনন্দন জানান আবদুল মোমেনকে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ যে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, সে কথা উল্লেখ করে মোমেন বলেন, প্রথম সফর হিসেবে ভারতকে বেছে নেওয়া তার প্রমাণ।বিবৃতি অনুযায়ী, মিয়ানমারের রাখাইনপ্রদেশ থেকে চলে আসা মানুষজনকে বাংলাদেশ যেভাবে মানবিক দৃষ্টিতে দেখেছে, সুষমা তার প্রশংসা করেন। আবদুল মোমেনকে তিনি বলেন, এই মানুষজন যেন দ্রুত, নিরাপদভাবে মিয়ানমার ফিরে যেতে পারে, ভারত সে জন্য সব রকমভাবে সচেষ্ট থাকবে। এই মানুষদের মানবিক সাহায্যের জন্য ভারতকেও ধন্যবাদ জানান আবদুল মোমেন।আবদুল মোমেনের সম্মানে গতকাল রাতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী এক নৈশভোজ দেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাতে দেখা করেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ভারতরত্ন প্রণব মুখার্জির সঙ্গে।বৈঠকে মোট চারটি বিষয়ে দুই দেশ চুক্তিবদ্ধ হয়েছে এক. বাংলাদেশের এক হাজার ৮০০ আমলাকে ভারত বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে। দুই. বিকল্প চিকিৎসার বিকাশে ঔষধি গাছগাছড়া তৈরিতে ভারতের আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তিন. বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা সিবিআইয়ের সঙ্গে চার. মোংলায় ইন্ডিয়ান ইকোনমিক জোনে লগ্নি আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষ চুক্তিবদ্ধ হলো ভারতের হীরানন্দনী গোষ্ঠীর সঙ্গে।