গরুর দুধে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও সিসা

গরুর তরল দুধে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক ও নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের উপাদান পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে বিভিন্ন অণুজীবও। এ ছাড়া প্যাকেটজাত গরুর দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য এমনকি দইয়েও মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ও সিসা মিলেছে। ফলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি হ্রাসসহ ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছেন ভোক্তারা।গতকাল রাজধানীর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি (এনএফএসএল)। সংস্থাটি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আর্থিক সহায়তায় গরুর দুধ, প্যাকেটজাত দুধ, দই ও গোখাদ্য নিয়ে এই জরিপ চালিয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধান এবং এএফএসএর প্রধান অধ্যাপক ড. শাহনীলা ফেরদৌসী এ গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদের কাছে।দেশের বিভিন্ন উপজেলা ও থানার খামার থেকে সরাসরি দুধ ও গোখাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে জরিপকাজের জন্য। আর দই সংগ্রহ করা হয়েছে ঢাকা শহরের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকান ও আশপাশের উপজেলার দোকান থেকে। বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত তরল দুধ ও আমদানি করা প্যাকেটজাত দুধও সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ল্যাবরেটরিতে পৌঁছানোর পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।গবেষণায় প্রাপ্ত ফলে জানানো হয়, ৬৯-১০০ শতাংশ গোখাদ্যে বিভিন্ন রকমের রাসায়নিকÑ কীটনাশক (৯টি নমুনায়), সিসা (২২টি নমুনায়), ক্রোমিয়াম (১৬টি নমুনায়), টেট্রাসাইক্লিন (২২টি নমুনায়), এনরোফ্লোক্সাসিন (২৬টি নমুনায়), সিপ্রোসিন (৩০টি নমুনায়) এবং আফলাটক্সিন (১৯টি নমুনায়) গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়া যায়।গরুর দুধের ৯৬টি নমুনার মধ্যে ৯ শতাংশ দুধে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কীটনাশক, ১৩ শতাংশে টেট্রাসাইক্লিন, ১৫ শতাংশে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রায় সিসা পাওয়া যায়। ৯৬ শতাংশ দুধে মেলে বিভিন্ন অণুজীব। প্যাকেটজাত দুধের ৩১টি নমুনায় ৩০ শতাংশে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি হারে আছে টেট্রাসাইক্লিন। একটি নমুনায় সিসা মিলেছে। একই সঙ্গে ৬৬ থেকে ৮০ শতাংশ দুধের নমুনায় বিভিন্ন অণুজীব পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দইয়ের ৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করে একটিতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সিসা পাওয়া গেছে। আর ৫১ শতাংশ নমুনায় মিলেছে বিভিন্ন অণুজীব।