বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বছরটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাস তিনেক পরেই ইংল্যান্ডের মাটিতে বসবে বিশ্বকাপের আসর। তাই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজকে ধরা হচ্ছিল বিশ্বকাপের জন্য ভালো প্রস্তুতি হিসেবে। আর বিশ্বকাপের এই প্রস্তুতি পর্বেই প্রথম দুই ম্যাচে হেরে সিরিজ খুইয়েছেন লাল সবুজের শিষ্যরা। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিলে মাত্র ২২৬ রান করে বাংলাদেশ। লাল সবুজের শিষ্যরা ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে সবকটি উইকেট হারিয়ে এ সংগ্রহ করে। জবাবে খেলতে নেমে গাপটিলের সেঞ্চুরিতে আট উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচেও আট উইকেট হেরেছিল টাইগাররা। টানা দুই ম্যাচে হেরে মাশরাফি-তামিমরা এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হেরে যান টা। যে পিচে টাইগাররা রানের দেখা পাচ্ছিলেন সে পিচেই রানের বন্যা বইয়েছেন মার্টিন গাপটিল-কেন উইলিয়ামসনরা। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ব্যর্থ হলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নেন গাপটিল। তার ব্যাট থেকে আসে ১১৮ রান। কেন উইলিয়ামসন ৬৫ ও রস টেইলর ২১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন দুজনে। সিরিজ বাঁচাতে হলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে আজ জিততেই হবে। না হয় এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হেরে যাবেন মাশরাফিরা। এমন জটিল সমীকরণ সামনে রেখে কিউইদের মাটিতে কঠিন পরিবেশে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কঠিন পরিবেশের চেয়ে দায়টা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ঘাড়েই পড়বে। উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন প্রথম ম্যাচের মতোই। তবে আবারো টাইগারদের রক্ষা করেছেন মোহাম্মদ মিথুন। তিনি ৫৭ রান করে দলকে ভরাডুবির হাত থেকে বাঁচান। ৬৭ বলে ৭টি চার ও ১টি ছয়ের মারে তিনি ইনিংসটি সাজিয়েছেন। পেয়েছেন টানা দুই ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি। মিথুনকে সঙ্গ দিয়েছেন সাব্বির রহমান। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৩ রান। ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে মিথুন-সাব্বিরের ব্যাট থেকে আসে ৭৫ রান। টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ইনিংসের ৫ ও ১৬ রানে লিটন-তামিমকে হারিয়ে শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। সেই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেননি টাইগাররা। মুশফিক-সৌম্যর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত দুইজনই ব্যর্থ হয়েছেন। ক্রিজে থিতু হওয়ার পরও ইনিংসকে লম্বা করতে পারেননি। সৌম্য ২২ ও মুশফিক ২৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। মাশরাফি-মিরাজ দুই অঙ্কের দেখা পেয়েছেন, তবে দুই অঙ্কের ঘর ছুতে পারেনি লিটন, তামিম ও মাহমুদুল্লাহ। ফ্ল্যাট পিচে হালকা ঘাস যা বাড়তি সুবিধা দেবে পেসারদের। ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল বলেছিলেন টসে জিতে বল করাটাই উচিৎ। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়কও ভুল করেননি। টসে জিতে বাংলাদেশকে পাঠিয়েছেন ব্যাটিংয়ে। তার প্রতিদান শুরু থেকেই দিতে শুরু করেন কিউই পেসাররা। লকি ফার্গুসন সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন। দুটি করে উইকেট নেন অ্যাসটল ও নিশাম। ঝুলিতে একটি করে উইকেট জমা হয় হেনরি, বোল্ট ও গ্র্যান্ডহোমের। বাংলাদেশ দলে পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেলেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে একাদশে কোনো পরিবর্তন ছাড়াই মাঠে নেমেছে। রুবেল হোসেন দলে ফিরবেন এমন গুঞ্জন ছিল, তবে শেষ পর্যন্ত রুবেলকে ছাড়াই নেমেছেন মাশরাফিরা।
