স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে

অগ্নিকা-ে ভয়ার্ত এক রাতের পর আতঙ্ক কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতালটি আংশিক চালু হয়। এর পর গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে পুরোপুরি চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে ১৪টিতে। এদিন সরকারি ছুটি থাকলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সবার ছুটি বাতিল করা হয়। ফলে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। আগুন লাগার কারণে বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর হওয়া রোগীরাও চিকিৎসা নিতে ক্রমান্বয়ে ফিরতে শুরু করেছেন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। সেই সঙ্গে জরুরি বিভাগে নতুন রোগীও চিকিৎসা নিতে আসছেন। ফেরত আসা রোগীদের সহায়তায় হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী বুথ। যার মাধ্যমে ফিরে আসা রোগীদের তথ্য সংরক্ষণসহ তাদের নির্ধারিত ওয়ার্ডে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তবে আগুনে শিশু ওয়ার্ড মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আপাতত এ হাসপাতালে শিশু রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে না। নতুন রোগী ভর্তি বিষয়ে হাসপাতালের অনুসন্ধান বিভাগের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, পুরনো রোগীদের পাশাপাশি নতুন সব ধরনের জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু হয়েছে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত ১৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। যদিও আপাতত ১১ নম্বর ওয়ার্ড (শিশু), ৮ নম্বর ওয়ার্ড (মহিলা সার্জারি) এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে (মহিলা) আমরা রোগী ভর্তি করছি না। এই ওয়ার্ডগুলোয় যে ধরনের রোগীদের সেবা দেওয়া হতো তাদের অন্য ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করা এক চিকিৎসক বলেন, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থেকে যে রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল তাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পাশাপাশি অন্য রোগীরাও আসছেন। শনিবার (আজ) থেকে জরুরি বিভাগের পাশাপাশি বহির্বিভাগেও পুরোপুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম বড়–য়া বলেন, চারতলা ভবনের তিনতলার শিশু ওয়ার্ড থেকে বৃহস্পতিবার আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। তারা প্রতিবেদন দিলে আগুনের কারণ জানা যাবে।হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ১০০ রোগী ভর্তি হলেও গতকাল ৬০-৭০ জন নতুন ভর্তি হয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে গতকাল নিজের গুলশানের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অগ্নিকা-ের আতঙ্ক কাটিয়ে রোগীরা ফেরার মাধ্যমে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভর্তি থাকা পুরনো রোগীদের পাশাপাশি নতুনরাও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে ৩টি ওয়ার্ড এখনো পুরোপুরি ব্যবহার উপযোগী হয়ে ওঠেনি। আর এই অগ্নিকা- আমাদের জন্য এক ধরনের সতর্কবার্তা, ওয়েক আপ কল।’ মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের বেশকিছু হাসপাতাল আছে পুরনো। এগুলোর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। আমরা সব হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে দেখব।