পাকিস্তান সফরে এসে প্রথম দিনই ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর করলেন সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। গতকাল রোববার সফরের প্রথম প্রহরেই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও যুবরাজ একসঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই সফরে দুদেশের মধ্যে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা থাকলেও পাকিস্তানের মাটিতে পা রাখার পরই বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন যুবরাজ। বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়ায় সৌদির প্রশংসা করেছেন ইমরান। তিনি বলেন, পাকিস্তান এবং সৌদি আরব নিজেদের সম্পর্ককে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে যেখানে আগে কখনো পৌঁছানো যায়নি।এদিকে আজ আফগান জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যুবরাজের সাক্ষাৎ হতে পারে বলে জানা গেছে।পাকিস্তানের সরকারি সূত্রের বরাত ডন বলছে, আফগানিস্তানের ১৭ বছরের যুদ্ধের অবসানের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তালেবান নেতাদের সঙ্গে যুবরাজ এই সাক্ষাৎ করছেন। আফগান শান্তি আলোচনায় ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে পাকিস্তান। দেশটি থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পর এই প্রচেষ্টা আরও জোরদার হয়েছে। রোববার রাতে রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটিতে পৌঁছান যুবরাজ। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান ইমরান খান। বিমানঘাঁটিতে মোহাম্মদ বিন সালমানকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খান ক্ষমতা নেওয়ার পর পরই পাকিস্তানে আর্থিক সঙ্কট তীব্র হয়েছে। সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর ভারত পাকিস্তানের দিকে আঙুল তুলেছে। তাছাড়া প্রায় এক সুরে সৌদি আরবের চির প্রতিদ্বন্দী ইরানও ভারতের সঙ্গে কার্যত এক সুরে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। এমতাবস্থায় সৌদি আরবের সঙ্গে সাতটি পৃথক সমঝোতা ও ঋণ-অর্থ ব্যবস্থাকে কিছুটা হলেও ভালো জায়গায় নিয়ে যাবে বলে ধারণা করছে অনেকেই। সৌদি রাজপুত্র পাকিস্তানসহ এশিয়ার তিনটি দেশে সফর শুরু করেছেন। পাকিস্তানের পর ভারতে সফরেও যাবেন যুবরাজ। এই সফরে তার সঙ্গে দেখা হবে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার চীন সফরে যাওয়ার কথা আছে তার। এদিকে গত বছর অক্টোবর মাসে পাকিস্তানকে বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে সৌদি আরব। পাশাপাশি পাকিস্তানের বন্দর শহর গ্বাদারেও কিছু বিনিয়োগ করার কথা বলেছিল সৌদি আরব। অধিকৃত কাশ্মীরের ওই এলাকা দিয়ে অর্থনৈতিক করিডর নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চীন। এ নিয়ে নিজেদের তীব্র আপত্তির কথা আগেই জানিয়েছে ভারত।