একটি সুখের সংসার খুঁজে পেতে আকুতি

জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সালেহ মুহাম্মদ নিপু (৪০) একজন ব্যবসায়ী। ঢাকার কেরানীগঞ্জে ঈগলু আইসক্রিমের পরিবেশক ছিলেন। আর স্ত্রী নাসরিন জাহান ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি নিয়েছেন চকবাজার আশিক টাওয়ারের হিসাবরক্ষক পদে। পুরান ঢাকার উর্দু রোডে তাদের বাসা। খালাতো ভাই-বোন নিপু ও নাসরিন ১০ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেছিলেন। তার দুবছর পর ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় ছেলে আবতাহি। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে সুখেই ছিলেন এ দম্পতি। কিন্তু সুখের সে সংসার মুহূর্তেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। চকবাজারের চুড়িহাট্টায় যে আগুন শত শত মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন এ দম্পতিও। এখন স্বজনরা চোখের জলে খুঁজে ফিরছেন নিপু-নাসরিনের হাসোজ্বল মুখ, সেই সুখের সংসার। তাদের অশ্রুধারা বেয়ে নামছে নোনা আকুতিÑ আমাদের ভালবাসার যৌথ সংসার ফিরিয়ে দাও!  স্বজনরা জানান, তারা রিকশাযোগে বাসায় ফেরার পথে দুর্ঘটনার সময় নিখোঁজ হন। এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজ মেলেনি। নাসরিন জাহানের ভাই আনোয়ার হোসেন রনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘ঘটনার দিন আমার বোন, বোনজামাই ও তাদের একমাত্র সন্তান আবতাহি চকবাজারের আশিক টাওয়ার থেকে বাসায় ফিরছিল। রাত তখন আনুমানিক ৯টা ৫০ মিনিট। চুড়িহাট্টায় সর্বনাশা অগ্নিকা-ের পর থেকেই তারা নিখোঁজ। কোথাও খোঁজ মিলছে না।’ রনি বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে থাকা মরদেহের ভেতর আমাদের তিনজন আছে কিনা, তা জানতে নমুনা দিয়েছি। ডিএনএ টেস্টের পর ডাক্তাররা আমাদের জানাবেন বলে জানিয়েছেন।’ রনি আরও বলেন, ‘গেল ৫ ফেব্রুয়ারি ছিল আবতাহির জন্মদিন। আর তার বাবা নিপুর জন্মদিন উদযাপন হয়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি। কে জানত সেটাই ছিল তাদের শেষ জন্মদিন।’  নিপুর ভাই ইসমাইল হোসেন আমাদের সময়কে জানান, সন্তানকে হারিয়ে তাদের বাবা-মা পাগলপ্রায়। চার ভাই ও পাঁচ বোন নিয়েই তাদের সংসার। ভাই-ভাবি আর ভাতিজার খোঁজে ইসমাইলও চারদিকে ছোটাছুটি করছেন।