প্রতি সেকেন্ডে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে পুরান ঢাকার বাসিন্দারা। অলি-গলি সব জায়গায় অবৈধ কারখানা। অধিকাংশ আবাসিক ভবনের বেসমেন্ট থেকে একতলা-দোতলা পর্যন্ত দাহ্য পদার্থের নকল কারখানা। এভাবে যুগের পর যুগ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে ওই এলাকায় বসবাস করছে পুরান ঢাকাবাসী। সিটি করপোরেশন, ব্যবসায়ী সংগঠন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, রাজধানীর পুরান ঢাকায় রয়েছে ২০ হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের অবৈধ কারখানা। সব ধরনের নকল প্রসাধনী পণ্য এখানে তৈরি হয়। এর মধ্যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের পারফিউমসহ প্রসাধনী সামগ্রীও তৈরি হচ্ছে পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি পরিবেশের নকল কারখানাগুলোতে। এ ছাড়া ফুটপাতে বিক্রি হওয়া স্যান্ডেল, জুতার সোল, পলিথিন, নানা খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হয়। এসব পণ্য তৈরি করতে বিভিন্ন রকম কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে পুরান ঢাকায় কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের কাজ করতে প্রলুব্ধ করে কারখানা মালিকরা। তারা শ্রমিকদের বেতন কম দিয়ে নিয়মিত ওভারটাইম দেয়। ফলে নিম্ন শ্রেণির মানুষ সংসার চালাতে দিনের পর দিন এ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে যাচ্ছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরান ঢাকায় নকল কারখানাগুলোতে কাজ করা শ্রমিকদের কেমিক্যালের ব্যবহার সম্পর্কে কোনো ধারণা নাই। কারখানার ক্ষতিকর কেমিক্যালের বস্তা ও ড্রামের পাশেই চলে তাদের নিত্যদিনের কাজ ও খাওয়া-ঘুম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরান ঢাকায় তৈরি নকল প্রসাধনী পণ্যসামগ্রী ব্যবহার করে মানুষ নানা ধরনের চর্ম রোগে ভোগে। এমনকি মরণব্যাধি ক্যান্সারসহ ভয়াবহ অসুখ হতে পারে। এখানে তৈরি নকল খাদ্যসামগ্রী খেয়ে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সমস্যা হতে পারে। কিডনি, লিভারসহ শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি দুই ব্যবসায়ী একই ফ্লাইটে সৌদি আরব যাচ্ছিলেন ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে। বিমানে তাদের পরিচয়। একজন আরেকজনকে তাদের পরিচয় কার্ড বিনিময় করলেন। তাদের মধ্যে একজন বিশ্বের নামি একটি কোম্পানির বাংলাদেশের এজেন্ট। অপরজন জানান, তার পুরান ঢাকায় সেম্পুসহ সকল ধরনের নামি-দামি ব্র্যান্ডের প্রসাধনী পণ্যের কারখানা আছে। নিজের পরিচয় কার্ড দিয়ে তার কারখানায় ঘোরার আমন্ত্রণ জানান তিনি। কার্ডের ঠিকানা ধরে পুরান ঢাকায় গিয়ে ঐ লোকটি নকল প্রসাধনীর কারখানা দেখতে পান এবং এরপর পুরান ঢাকায় ব্যবসা করা লোকটিকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান (অব) বলেন, পুরান ঢাকায় মানুষ প্রতি সেকেন্ডে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। এখানে দুই ধরনের কেমিক্যাল আছে। একটা দ্রুত জ্বলে, অন্যটি কম জ্বলে। তবে দুটোই বিপজ্জনক। পুরান ঢাকায় এসব কারখানা কোনোভাবেই রাখা যায় না। মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে হলে পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গুদাম ও কারখানা সরাতে হবে। দূরে কোথাও কেমিক্যালের গোডাউন থাকবে। এখানে থাকবে তার ব্যবসায়িক অফিস।
সর্বশেষ
সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
দর্পন টিভি - 0
সুনামগঞ্জের শাল্লায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে উপজেলার জনস্বাস্থ্যের নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদে...