বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারীর লাশ মর্গে, নিতে আসেননি কেউ

বাংলাদেশ বিমানের ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাই চেষ্টার সময় কমান্ডো অভিযানে নিহত অস্ত্রধারী তরুণের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত লাশ নিতে তার কোনো স্বজন মর্গে আসেননি। বিষয়টি নিশ্চিত করে পতেঙ্গা থানার কনস্টেবল শংকর নাথ বলেন, লাশটি মর্গে আনার পর এ পর্যন্ত নিহত তরুণের কোনো স্বজন সেখানে আসেননি। উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় আজ সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানান পতেঙ্গা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নুরুল আলম চৌধুরী। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি। এর আগে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে ওই তরুণের লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় নগরের পতেঙ্গা থানার পুলিশ। পরে নিহত তরুণের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন দে। প্রতিবেদনে বলা হয়, তরুণের গায়ের রং শ্যামলা। উচ্চতা পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি। তাঁর বুকের দুই পাশে চামড়ায় জখমের দাগ রয়েছে। পাঁজরের বাম পাশে শুকনো রক্তের দাগ। পেটের উপরিভাগে নাভির ২ ইঞ্চি ওপরে ডান পাশে একটি গোলাকার ক্ষতচিহ্ন। তরুণের মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে সুরতহাল প্রস্তুতকারী কর্মকর্তার মন্তব্য ঘরে লেখা রয়েছে, কমান্ডো অভিযানে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি (তরুণ) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজটির (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র আট মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন। ২৫ বছর বয়সী ওই তরুণের নাম মাহাদী বলে গতকাল রাতে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটের সামনে এক ব্রিফিংয়ে জানানো হয়। তবে তার পুরো পরিচয় পাওয়া যায়নি। এমনকি উড়োজাহাজটি ছিনতাইচেষ্টার কারণও জানা যায়নি। এদিকে সোমবার দুপুরের দিকে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ওই তরুণের পরিচয় পাওয়ার কথা জানিয়েছে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেন, ‘গতকাল রোববার কমান্ডো অভিযানে নিহত বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারীর ফিঙ্গার প্রিন্ট অনুসন্ধানে র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডাটাবেজের একজন অপরাধীর তথ্যাদির সঙ্গে মিল পাওয়া যায়।’ ডাটাবেজে রক্ষিত তথ্য অনুযায়ী বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারীর নাম মো. পলাশ আহমেদ এবং তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জে বলে জানান র‌্যাবের পরিচালক।