সেটা পিস্তল কিনা এখনো আমরা ওয়াকিবহাল না : বিমান সচিব

চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারীর হাতে পিস্তল ছিল কিনা সে বিষয়ে আমরা ওয়াকিবহাল না বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক। আজ সোমবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরেই সিদ্ধান্ত জানানো হবে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘সেটা পিস্তল কিনা এখনো আমরা ওয়াকিবহাল না। পিস্তল কিনা, খেলনা পিস্তল কিনা যে কোনো কিছু হতে পারে। আমরা তদন্ত টিম গঠন করেছি। তদন্ত টিমের রিপোর্টের পরেই বুঝতে পারবো এটা প্রকৃত অস্ত্র নাকি খেলনা অস্ত্র বা কী? এর আগে তো আসলে আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারছি না। পুলিশ কমিশনার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আসলে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার রিপোর্ট আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি ৮/১০ জন যাত্রীর যেভাবে সিকিউরিটি বডি স্ক্যান হয়, তারও (বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী) ঠিক সেভাবে হয়েছে। আনসাররা তাকে চেক করেছে। তার ঘাড়ে একটা ব্যাগ ছিল, সেই ব্যাগটাও স্ক্যানিং মেশিনের ভেতর দিয়ে গেছে। কিন্তু স্ক্যানিং মেশিন সেখানে কোনো কিছু শো করেনি বা লাল বাতি জ্বলেনি যে তার কাছে কোনো কিছু আছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরেই আসলে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারবো।’ এর আগে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুবার রহমান জানিয়েছেন, বিমান ছিনতাই করতে গিয়ে যে যুবক সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছেন, তার হাতে থাকা অস্ত্রটি খেলনা পিস্তল ছিল। সেই পিস্তল দিয়েই ভয় দেখিয়ে মাহাদী নামে ওই যুবক জিম্মি নাটকের চেষ্টা করেছিল। চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুই ঘণ্টার জিম্মি সঙ্কটের অবসানের পর গতকাল রোববার রাতে পিস্তলটি পরীক্ষা করে এ তথ্যের কথা জানান তিনি। তিনি বলেন ‘তার কাছে যে অস্ত্রটি পাওয়া গেছে এটা ফেইক, খেলনা পিস্তল।’ পরে বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীও রাতে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বলেন, ‘ওই পিস্তলটি ছিল খেলনা।’ চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বিমানের ফ্লাইটটি বিকালে ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার পর মাঝ আকাশে অস্ত্রধারী ওই যুবক যাত্রীদের ভয় দেখানোর পাশাপাশি ক্রুদের জিম্মি করেন। ঘটনা শুরুর পরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেন, ‘যতটুকু জানা গেছে, একজন সন্দেহভাজন পাইলটের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিল।’ তবে, বিমানে থাকা এক যাত্রী বলেন, ‘ওই ব্যক্তি পিস্তল নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের বলেন, ‘কেউ উঠে দাঁড়ালে বা নড়াচড়া করলে গুলি করা হবে। এসময় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ওই ব্যক্তি কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়ে।’ চট্টগামে বিমানটি অবতরণের পর প্রায় দেড়শ যাত্রীর সবাই এবং পাইলট ও ক্রুরা সবাই নেমে আসার পর একমাত্র ছিনতাইকারীকে ধরতে শুরু হয় সামরিক বাহিনীর কমান্ডোদের অভিযান। তাতে নিহত হন ওই যুবক। অভিযানের পর এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান বলেছিলেন, ‘ওই যুবকের কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।’ বিমান ছিনতাইয়ের এই ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।