পাকিস্তানে আটক ভারতীয় পাইলটের ভিডিও প্রকাশ

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ভূপাতিত হওয়ার আটক ভারতীয় জেট বিমানের দুই পাইলটের মধ্যে একজনের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। আজ বুধবার দুপুরের এই ভিডিও প্রকাশ করা হয়। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজে প্রকাশিত ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ফ্লাইট সুট পরা একজন ব্যক্তি হাত পেছনে বাঁধা অবস্থায় কথা বলছেন। তার পরিচয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার নাম উইং কমান্ডার অভিনন্দন। আমার সার্ভিস নম্বর ২৭৯৮১। আমি এই ফ্লাইটের পাইলট। আমার ধর্ম হিন্দু।’ পাকিস্তানি সেনারা তাকে আরও প্রশ্ন করতে গেলে তিনি জাবাবে বলেন, দুঃখিত স্যার।  আমার এইটুকুই বলার অনুমতি রয়েছে।’ এরপর তিনি কাউকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমি কি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী আছি কিনা- এটা জানা আমার অধিকার।’ তাকে আরও প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দিতে অস্বীকার করেন। ভিডিও ছাড়াও পাইলট অভিনন্দনকে ঘটনাস্থল থেকে আটকের সময়ের একাধিক ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওতে এর আগে বুধবার সকালে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, আকাশসীমা লঙ্ঘন করায় তারা দুটি ভারতীয় ফাইটার জেটকে ভূপাতিত করেছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘সকালে পাকিস্তান বিমান বাহিনী কর্তৃক ভারতে হামলার জবাবে নিয়ন্ত্রণ রেখা (লাইন অব কন্ট্রোল) অতিক্রম করে ভারতীয় বিমান। এ সময় পাকিস্তান বিমান বাহিনী দুটি ভারতীয় বিমানকে ভূপাতিত করে। একটি বিমান পাকিস্তানের আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরে এবং অন্যটি ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে পড়েছে। এতে দুজন ভারতীয় পাইলটকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন আহত অবস্থায় সিএমএইচে চিকিৎসাধীন আছেন।’ তবে ভারত সরকার থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়নি।  ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, আত্মরক্ষার অধিকার বোঝাতে নিজেদের সীমানা থেকে স্ট্রাইক করেছে। মানুষের ক্ষতি এড়িয়ে একটি অসামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। আরও জানানো হয়েছে পাকিস্তান হামলা করতে চায় না। কিন্তু ভারত যদি হামলা করে তবে তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই বলেই প্রকাশ্যে হামলা চালানো হয়েছে। উদ্দেশ্য থাকলে এভাবে হামলা চালানো হতো না বলে দাবি করছে পাকিস্তান। বুধবার সকালে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফ্ফারের জানিয়েছেন, পাকিস্তান গুলি করে ভারতীয় দুটি জেট বিমান ভূপাতিত করেছে। এর একটি বিমান পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল (আজাদ জম্মু এবং কাশ্মীর) এবং অন্যটি ভারত নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল কাশ্মীরে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের সামনে পাল্টা হামলা করা ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না। আমরা আসলে যুদ্ধ চাই না, উত্তেজনা বাড়াতে চাই না। শুধু এটা দেখানো আমাদের প্রয়োজন ছিল যে, ভারতের হামলার জবাব আমরা দিতে জানি। এ কারণে আমরা কোনো সামরিক বা বেসরমারিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত না হানার সিদ্ধান্ত নিই। কোনো মানুষের জীবন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে অনুযায়ীই হামলা করা হয়েছে।’