স্ট্যামফোর্ডের মামুনের পেশাই ছিল প্রশ্নফাঁস

ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন চাকরির প্রশ্নপত্র ফাঁস ও প্রশ্নের উত্তর সরবরহকারী এক জালিয়াতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত শাখা (সিআইডি)। গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা থেকে মামুন মিয়া ওরফে মাহবুব মামুন নামে ২৪ বছর বয়সী এ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য দিয়েছেন মামুন। গতকাল শুক্রবার তিনি আদালতেও এ বিষয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। জানিয়েছেন লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রশ্নফাঁসকেই ব্যবসা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। জালিয়াতির মাধ্যমে এরই মধ্যে ৭০ লাখ টাকা কামিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় স্ট্যামফোর্ডের অর্থনীতি বিভাগের এ ছাত্র। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মূল হোতাদের পাশাপাশি এখন প্রধান প্রধান সহযোগীদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুরো চক্রটিকেই চিহ্নিত করা গেছে। প্রশ্নফাঁস চক্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার প্রক্রিয়াও চলমান। সিআইডি সূত্র জানায়, মামুন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম সদস্য। পড়াশোনা শেষ না হলেও অনৈতিক উপায়ে এরই মধ্যে প্রায় কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। গত দেড় বছরে সিআইডি প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে গ্রেপ্তার চক্রটির দুই মূল হোতা ইব্রাহীম মোল্লা ও আইয়ুব আলী বাঁধনের প্রধান সহযোগী ছিলেন মামুন। জিজ্ঞাসাবাদে মামুন জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে আইয়ুব আলী বাঁধনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা একই বাসায় থাকতেন। বাঁধনের মাধ্যমে ২০১৭ সালের শুরুর দিকে যোগাযোগ হয় ইব্রাহীম মোল্লার সঙ্গে। এ সময় তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইস পদ্ধতিতে প্রশ্নফাঁস করে ছয় শিক্ষার্থীর ভর্তিতে সহায়তাও করেন। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকরি পরীক্ষা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, সোনালী ব্যাংক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, তিতাস গ্যাস, পরিবার-পরিকল্পনা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে প্রায় ৭০ লাখ টাকা আয় হয়েছে তার। এর মধ্যে মূল চক্রান্তকারী ইব্রাহীম মোল্লাকে ৫৩ লাখ টাকা দিয়েছেন মামুন। জালিয়াতির এ কাজে ইব্রাহীম মোল্লার আরও কিছু সহযোগীর নাম জানিয়েছেন তিনি। তারা হলেন শহিদুল ইসলাম শহীদ, মিঠুন, ঢাকা কলেজের মহসিন, আজাদ মাহমুদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফয়সাল, রবিউল ইসলাম রবি ও জাহিদ হাসান জয়।