বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের মধ্যে ব্লাডক্যানসার একটি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এটি লিউকোমিয়া নামে পরিচিত। ব্লাডক্যানসার হচ্ছে রক্ত অথবা অস্থিমজ্জার ক্যানসার। এতে শ্বেতকণিকার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিভাজন ঘটে। ব্লাড ক্যানসারের সুনির্দিষ্ট লক্ষণ ধরা সহজেই সম্ভব হয় না। একজন মানুষ পুরোপুরি সুস্থ থাকলেও হঠাৎ করে তার ব্লাডক্যানসার ধরা পড়তে পারে। অর্থাৎ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগী নিজেই বুঝতে পারেন না যে, তিনি কত মারাত্মক একটি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন।ব্লাডক্যানসারের কিছু উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হলো-
ঘন ঘন জ্বর হওয়া (এটা সবচেয়ে কমন), রাতের বেলা অনেক বেশি ঘেমে যাওয়া, প্রচ- দুর্বলতা ও অবসাদ, খিদে না থাকা ও ওজন কমতে থাকা, মাড়ি ফোলা বা খেতে গেলে রক্তক্ষরণ, ছোট কাটাছড়া থেকে অনেক বেশি রক্তক্ষরণ, স্নায়বিক লক্ষণ (মাথাব্যথা), স্ফীত যকৃৎ অল্পে ছড়ে যাওয়া, সংক্রমণ হওয়া, অস্থিতে যন্ত্রণা, গাঁটে ব্যথা, স্ফীত টনসিল ইত্যাদি। লিউকেমিয়ার কোনো নির্দিষ্ট কারণ নেই। বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন লিউকেমিয়া হতে পারে। সম্ভাব্য কারণগুলো হলো-প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম আয়ন বিকিরণ, কিছু নির্দিষ্ট রাসায়নিক পদার্থ, কিছু ভাইরাস, জিনগত বা জম্মগত। ব্লাড ক্যানসার বা লিউকিমিয়া আছে কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়। যেমন-রক্তের কোষ পরীক্ষা বা ঈইঈ এবং বায়োপসি বা হাড়ের মজ্জা পরীক্ষা। ব্লাডক্যানসার বা লিউকিমিয়ার চিকিৎসানির্ভর করে রোগীর বয়স কত, ক্যানসারের ধরন, ক্যানসার ছড়িয়ে গেছে কিনা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। চিকিৎসা পদ্ধতির ভেতর আছে কেমোথেরাপি, রেডিও থেরাপি, হাড়ের মজ্জা প্রতিস্থাপন ইত্যাদি। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্লাডক্যানসার ধরা পড়লে এ রোগ সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলা সম্ভব। তবে ব্যাপারটা সহজ নয়। কারন প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার ধরা পড়া প্রায় অসম্ভব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী বুঝতে পারেন না যে, তিনি একটি মারাত্মক রোগে আক্রান্ত।ক্যানসার রোগ বিশেষজ্ঞ লেখক : সহকারী অধ্যাপক জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা চেম্বার : ল্যাবএইড, পল্লবী সেকশন-৭, মিরপুর, ঢাকা ০১৮১৯৪৯২৪২৩, ০১৯৮৮১১০৪১৮