পাকিস্তানে শারীরিক নির্যাতনের শিকার অভিনন্দন, বুকের পাঁজরে আঘাতের চিহ্ন

পাকিস্তানের দীর্ঘ ৫৮ ঘণ্টা আটকের পর গত শুক্রবার ভারতীয় বিমানসেনা উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে মুক্তি দেওয়া হয়। নিজের দেশে পা রাখার পর থেকেই তার বিভিন্ন রকম শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা করে ভারত সরকার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুক্তির একদিন পর শনিবার অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, বন্দীদশায় পাকিস্তানি সেনারা তাকে কোনো রকম শারীরিক নির্যাতন করেনি। তবে মানসিক নির্যাতনের কথা তিনি উল্লেখ করেছিলেন।  যদিও পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, জেনেভা চুক্তির জন্য তারা অভিনন্দনের গায়ে হাত দেয়নি। তবে সংবাদসংস্থা এএনআই-এর রিপোর্ট জানিয়েছে, ভারতীয় উইং কমান্ডার অভিনন্দনের ডাক্তারি পরীক্ষায় বুকের পাঁজরে আঘাতের চিহ্ন ধরা পড়েছে। পাইলটের গায়ে এই আঘাত পাকিস্তানের স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে মার খাওয়ার ফল বলে মনে করছেন ভারতীয় চিকিৎসকরা। এমআরআই স্ক্যানে তার মেরুদন্ডের শেষভাগে একটা চোট ধরা পড়েছে, যা পাকিস্তানি জেট বিমান এফ-১৬ এর সঙ্গে যুদ্ধের পর ভারতীয় মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধ বিমান থেকে পড়ে যাওয়ার ফল বলে মনে করা হচ্ছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ডাক্তারি পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল অভিনন্দনের শরীরের ভেতরে কোনো আঘাত চোট লেগেছে কি না অথবা পাকিস্তানি সেনারা নজরদারি চালাবার জন্য তার শরীরের ভেতরে কোনো যন্ত্র ঢুকিয়ে রেখেছে কি না তা খতিয়ে দেখা। এএনআই সূত্রে জানানো হয়েছে, দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল হাসপাতালে তার সমস্ত ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। আগামী ১০ দিনে তার আরও নানারকম শারীরিক পরীক্ষা করানো হবে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪৬ জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। এর পর থেকেই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। এ ঘটনার ১২ দিন পর গত মঙ্গলবার ভোরে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। এর পরদিন দুই দেশের সেনাদের মধ্যে কাশ্মীর সীমান্তে গোলা ও গুলিবিনিময় হয়। আকাশযুদ্ধে ভারত হারায় দুটি যুদ্ধবিমান। তখনই পাকিস্তান বাহিনীর হাতে বন্দী হন ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন।