১১২৪ শ্রেণির ভূমি রূপান্তর হলো মাত্র ১৬ শ্রেণিতে

সর্বশেষ ভূমি জরিপে প্রকাশিত খতিয়ান পরীক্ষায় উঠে আসা ১ হাজার ১২৪টি শ্রেণির ভূমিকে মাত্র ১৬ শ্রেণিতে রূপান্তর করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমির এই শ্রেণি সহজবোধ্য ও বাস্তবোপযোগী করতে মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগ। এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমির ১৬টি শ্রেণি হলো বন, পাহাড়, নদী, জলাভূমি, রাস্তা, টার্মিনাল, বন্দর, আবাদি, আবাসিক, অফিস, বাণিজ্যিক, শিল্প, বিনোদনকেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্মৃতিস্তম্ভ ও ধর্মীয় স্থান। এ প্রসঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মাক্ছুদুর রহমান পাটওয়ারী আমাদের সময়কে জানান, গত বছর ১২ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সভায় বিদ্যমান ভূমি জরিপ কার্যক্রমে ১৫৩টি শ্রেণির ভূমিকে ১০-১২টি শ্রেণিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। ওই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সব জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস থেকে সদ্যপ্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ৩৩৯টি (কমবেশি) শ্রেণির অস্তিত্ব রয়েছে। আর সর্বশেষ জরিপে প্রকাশিত খতিয়ান পরীক্ষা করে দেখা যায়, বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ১১৪ শ্রেণির অস্তিত্ব রয়েছে। এত বিপুলসংখ্যক শ্রেণিকে কমিয়ে আমরা মাত্র ১৬টি শ্রেণিতে রূপান্তর করেছি। ফলে এই শ্রেণিগুলো সর্বসাধারণের নিকট গ্রহণযোগ্য, সহজবোধ্য, প্রয়োগযোগ্য ও যুগোপযোগী হবে বলে আশা করছি। সচিব আরও জানান, বিষয়টি পর্যালোচনা এবং যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ওই বিষয়ে অভিজ্ঞ, দক্ষ ও অবসরপ্রাপ্ত কিছু কর্মকর্তা এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ওই কর্মশালায় ভূমির বিদ্যমান শ্রেণিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একই শ্রেণির ভূমিকে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়েছে এবং এমন কিছু দুর্বোধ্য নাম রয়েছে, যা সাধারণ জনগণের কাছে আদৌ বোধগম্য নয়। এ লক্ষ্যে ওই কর্মশালায় বিদ্যমান শ্রেণিগুলোকে সর্বসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য, সহজবোধ্য, প্রয়োগযোগ্য ও যুগোপযোগী করে ১৬টি শ্রেণিতে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তা ছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক সব নাগরিকের জন্য নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করেছে। অধিকন্তু জন্মের সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের জন্মসনদ প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ভূমি অতিমূল্যবান সম্পদ বিধায় ভূমির প্রকৃত মালিকের সম্পত্তির সুরক্ষাকল্পে ক্ষেত্রবিশেষ জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর অথবা নাগরিকের জন্ম রেজিস্ট্রেশন নম্বর খতিয়ানে উল্লেখ করা হচ্ছে। এদিকে ভূমির বিদ্যমান খতিয়ান ফরম আরও সহজ এবং যুগোপযোগী করতে পুরনো খতিয়ান সংশোধন করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। সংশোধিত খতিয়ানে জরিপের নাম উল্লেখ করতে হবে।যেমন-আরএস-১, আরএস-২ ইত্যাদি। খতিয়ান মৌজার সিট নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) উল্লেখ করতে হবে। খতিয়ানে ব্যক্তি ভূমি মালিকের ক্ষেত্রে মালিকের নাম, পিতা/স্বামীর নাম, মাতার নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) সংযোজন করতে হবে; খতিয়ানে রেভিনিউ সার্ভে নম্বর বর্তমানে ব্যবহৃত না হওয়ায় তা বাদ দিতে হবে; খতিয়ানে জমির শ্রেণির কলামে বিদ্যমান (ক) কৃষি ও (খ) অকৃষি সাব-কলামের সঙ্গে আরও একটি সাব-কলাম (গ) যুক্ত করতে হবে এবং ওই সাব-কলামের শিরোনাম হবে স্থানীয় নাম।