বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অর্থ পাচারের (মানি লন্ডরিং) মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে একই সঙ্গে ২০০৭ সাল থেকে কারাগারে থাকা এ আসামির ১২ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন আদালত, যা আদায়পূর্বক রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রায়ে লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকের হিসাবে থাকা আসামি মামুনের অর্থ পাচারের ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকাও রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে ওই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, অর্থ পাচারের আইন ২০০২ এর ১৩ (২) ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ দণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। আসামি পক্ষের আইনজীবী জাহেদুল ইসলাম কোয়েল জানান, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং ও করফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০টিরও বেশি মামলা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিটিএল ও গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালের চেয়ারম্যান এম শাহজাদ আলী নেদারল্যান্ডের একটি ঠিকাদারি কোম্পানির বাংলাদেশের এজেন্ট ছিলেন। ওই কোম্পানি রেলওয়ের সিগন্যালিং আধুনিকীকরণের টেন্ডার পান। কিন্তু ২০০৩ সালে কার্যাদেশ চূড়ান্ত করার সময় আসামি মামুন উক্ত কাজের বিপরীতে তার কাছে অবৈধ কমিশন দাবি করেন। অন্যথায় কার্যাদেশ বাতিল করার হুমকি দেন। এরপর শাহজাদ আলী ২০০৪ সালে ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা মামুনের লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা করেন। ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এই অভিযোগেই রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করে দুদক। পরের বছর ২৬ এপ্রিল দুদকের উপ পরিচালক মো. ইব্রাহিম আদালতে মামুনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছর ৩১ অক্টোবর আদালত মামুনের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জগঠন করেন। এরপর বিভিন্ন সময় আদালত এ মামলার বিচারকালে চার্জশিটের ১০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
